Alam

Web Designer

Blogger

Freelancer

Writer

IT Consultant

Photographer

Alam

Web Designer

Blogger

Freelancer

Writer

IT Consultant

Photographer

Blog Post

মোটা বই

January 30, 2022 Memoirs
মোটা বই

সাল ১৯৮১ – কোনোরকম পাশ করে ক্লাস নাইনে উঠি। পাশ করেছি তাতেই খুশি। সাইন্স পড়বো ভাবতেই আরো আরো খুশি। আমাদের তখন পোস্ট অফিস থেকে বই সংগ্রহ করতে হতো। আমি আমার বাবার সাথে গিয়ে ক্যান্টনমেন্ট পোস্ট অফিস থেকে বই কিনে নিয়ে আসি। দাম কতো দিয়েছিলাম তা মনে নেই। সম্ভবত বেশি দাম ছিলো না।

যাই হোক, সব বই হাতে নিয়ে ফিজিক্সের বই দেখে ঘাবড়ে গেলাম। এতো মোটা বই! ভয় আর কাটে না।

কয়েকদিন পর যখন রেজিস্ট্রেশনের সময় এলো তখন স্কুলের স্যারেরা জানিয়ে দিলো যে আমার সাইন্সে পড়া হবে না। কেননা, আমি অনেক বাজে রেজাল্ট করে নাইনে উত্তীর্ণ হয়েছি। আমি কান্নাকাটি শুরু করে দিয়েছি। এটা দেখে আমার বাবা আমাকে নিয়ে স্কুলে যায় রিকোয়েস্ট করার জন্যে। স্যারেরা সাফ সাফ জানিয়ে দেয় যে এতো খারাপ রেজাল্ট নিয়ে সাইন্সে পারবে না। আমার কান্নাকাটি দেখে বাবা আবার স্যারদের রিকোয়েস্ট করেন। এবার একটা শর্তে আমার সাইন্সে পড়ার অনুমতি মিললো। তা হলো, আমাকে প্রথম সাময়িকিতে অংকে ভালো করে দেখাতে হবে।

আমি তাই করেছিলাম। সব স্যারদের তাক লাগিয়ে প্রথম সাময়িকি পরীক্ষাতেই সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছিলাম।

স্কুলে ফাঁকি দেয়ার ব্যাপারে মাহির থাকার পরেও স্যারদের কাছে কেমন জানি প্রিয়ই ছিলাম।

আমার সব বন্ধুরা “মুসলিম মডার্ণ হাই স্কুল” এ পড়তো। আমি পড়তাম ভাঙ্গা বেড়ার স্কুল”উত্তর কাফরুল উচ্চ বিদ্যালয়” এ। এই স্কুল প্রতিষ্ঠার পর থেকে কোনো ছাত্র প্রথম বিভাবে উত্তীর্ণ হতে পারেনি। আমি বন্ধ্যাত্ব ঘুচিয়ে দিয়েছিলাম। আমি আর ফেরদৌসি সেবারই (১৯৮৩ সাল) প্রথম বিভাবে উত্তীর্ণ হই। আমি চারটা বিষয়ে লেটার মার্কস পাই। তার মাঝে সেই মোটা বই ফিজিক্সও ছিলো।

উনচল্লিশ বছর পেরিয়ে গেছে। এরপর শুধু একবারই মার্কশীট ও সার্টিফিকেট আনতে গিয়েছিলাম। কয়েকজন স্যারের মৃত্যুর খবর বন্ধুদের কাছ থেকে শুনেছিলাম। এর মাঝে দুইজন বন্ধুও চিরবিদায় নিয়েছে।

সেদিন মোটা বইয়ের কাছে হারিনি। অংক থেকে শূণ্য আমার আজও পেছন ছাড়েনি – শূণ্য ভাবনা!

Tags: