Fountain Pen
///মন-ক্যামেরা-ক্লিক///
মো. খোরশেদ আলম
মঙ্গলবার, ১৩/০৩/২০০১
– হ্যালো! কে?
– হুম, আমি। কেমন আছো?
– ভালো। তুমি কেমন আছো? ও ভালো কথা; তোমার কুরিয়ারে পাঠানো যাযাদি’র (যায় যায় দিন) ফাগুনের বিশেষ সংখ্যাটা পুরোটাই পড়েছি। ভালো লেগেছে।
– শোনো, আমাকে একটা ফাউন্টেইন পেন দিও তো!
– হঠাত কলম প্রীতি? তাও আবার ফাউন্টেইন পেন! কি ব্যাপার বলো তো? ফাউন্টেইন পেনের চল তো উঠেই গেছে প্রায়।
– তুমি জানো যে আমি এখনো ফাউন্টেইন পেন দিয়ে লিখি। যাযাদি ক্যামেরার উপর লেখা চেয়েছে আগামী সংখ্যায় ছাপাবে বলে। দেখি কিছু লেখা যায় কি-না। কি লেখা যায় বলোতো? তোমায় বলেছি,- তোমার ছবি দিতে, তোমার ছেলের ছবি দিতে, তোমার হাসবেন্ডের ছবি দিতে। তাহলে ঐ ছবিগুলোর উপর কিছু লেখা যেতো। সাটার স্পীড, এপারচার এডজাস্টমেন্ট, লাইটিং ভালো, খুব ভালো বা মোটামুটি মন্তব্য করে…
– কেনো, আমায় নিয়ে লেখো। নাহ বাবা থাক। যদি যাযাদি আমার হাসবেন্ড পড়ে! দরকার নেই। কলম আগামীকাল কুরিয়ারে পেয়ে যাবে। কবিতা লিখো, যেমনটি তুমি লেখো।
– তবে একটা কবিতা শোনো। গতকালকে লেখা। কি বলবো?
– বলো।
গোপনে গোপনে হৃদয়ের গোপনে
এতো গোপন তুমি করেছিলে গোপন
কেনো তুমি গোপন আর করলেনা গোপন
যা ছিলো আমারও গোপন…
(অনেকক্ষণ চুপ)
– তারপর?
– গোপন মানবী
(তারপর নিঃশব্দতা)
– হ্যালো…, কী কথা বলছো না যে? কবিতাটা কেমন হয়েছে?
– অন্যদিন বলবো। এখন রাখি।
তোমার সাথে পরিচয় এইতো সেদিন, গত রোজার ঈদে। গ্রামীনফোনের এসএমএস’এর বদৌলতে। শুধু “ঈদ মুবারাক” লিখে পাঠিয়েছিলাম, তাও আবার ভুল করে। এ থেকেই পরিচয়, যোগাযোগ। কতো তর্ক, কতো কথা। মেসেজ আর মেসেজ, ফোন আর ফোন। একটা ছেলে আর একটা মেয়ের মাঝে কি শুধুই বন্ধুত্ব হয়? না-কি আরো পথ, বহুদূর…। তোমার অফিসে তো সেদিনই তোমায় প্রথম দেখলাম। চমৎকার করে শাড়ী পড়েছিলে। ফেরার পথে ভাবনা আমার কবিতা হয়ে গেলো।
চোখ!
পলক ফেলতে ফেলতে থমকে যায় প্রজাপতির রঙে
শাড়ীতো তুমিই পড়েছো
সর্ষের বাগানে
চোখ!
শ্রষ্টা আমায় চোখ দিয়েছে।
তোমার বিয়ে হয়েছে আজ পনেরো বছর। চমৎকার স্বামী পেয়েছো। সন্তানের মা হয়েছো। তারপরও তোমার ভাবনা আমার কবিতা হয়ে যায়। দেখতে ইচ্ছে করে, কি রঙের শাড়ী পড়েছো। নীল, বেগুনী। তুমি বলেছিলে,- চোখে চোখ রেখে কথা বলতে হয়। এতে নাকি বুঝতে পারা যায়। কি বুঝেছো সেদিন অথবা তারপর…? তোমার চোখের তাঁরায় কি দেখা হবে আমার? আমারও তো বউ আছে, ছেলে আছে।
বেলা বারোটা বাজে। একটু আগে কুরিয়ার পেলাম। চমৎকার পার্কার ফাউন্টেইন পেন। কালি ভরেই পাঠিয়েছো। সবুজ। চমৎকার রোদ উঠেছে আজ। কাল থেকে ঈদুল আযহার বন্ধ। ঢাকা শহর কয়েকদিনের জন্য ফাঁকা হয়ে যাবে। ফোন করলাম।
– হ্যালো!
– হুম মম, আমি। তোমার পাঠানো সবুজ কালিতে ভরা নীল কলমটা পেয়েছি। থ্যাংকস।
– এবার আমার জন্য কবিতা লিখো…
– মনের ক্যামেরায় ক্লিক করা কিছু ভাবনার ডেভেলপ করলাম তোমার পাঠানো নীল কলমের সবুজ কালিতে। যাযাদি’র আগামী বিশেষ সংখ্যায় পজেটিভ দেখে নিও। ও আচ্ছা, আজ একটু তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরবো। বউ-ছেলেকে নিয়ে মার্কেটে যাবো। ঈদের কিছু কেনাকাটা করতে হবে। হ্যালো…, হ্যালো…, মম, চুপ করে যে! তোমার জন্য টীপ কিনবো, একপাতা নীল টীপ। কুরিয়ারে পেয়ে যাবে। হ্যালো…, হ্যালো…
– (শুধু নিঃশ্বাসের শব্দ… কোনো কথা নেই… কিছুক্ষন পরে খট করে একটা শব্দ। লাইনটা কেটে গেলো)

Hi, I’m Alam — a mathematician at heart who’s passionate about numbers, technology, and creative problem-solving. I also enjoy writing stories and poems in my free time.
WOW